Current Date:Nov 25, 2024

মন্ত্রিত্ব ফিরিয়ে নিয়ে জাপাকে বাঁচান, প্রধানমন্ত্রীর প্রতি রওশন এরশাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক : সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান বেগম রওশন এরশাদ জাতীয় পার্টিকে রক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য চাইলেন সংসদে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করেছিলাম মন্ত্রিসভা থেকে আমাদের পার্টির সদস্যদের প্রত্যাহার করুন। কিন্তু সেটা হয়নি। এভাবে টানাটানি করে বিরোধী দল হওয়া যায় না। হয় আমাদের বিরোধী দল হতে দেন, নয় তো সবাইকে মন্ত্রী বানাইয়া দেন। আমি লজ্জায় সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে পারি না। জাতীয় পার্টির হয়ে কোথাও আমি সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারি না। তারা প্রথমেই জিজ্ঞাসা করে আপনারা সরকারেও আছেন আবার বিরোধী দলে। এ কেমন করে সম্ভব? তখন লজ্জা করে। বিশ্বের কোনো দেশে এমন নজির নেই। তাই আপনার কাছে অনুরোধ, আপনি আমাদের মন্ত্রীত্ব নিয়ে জাপাকে বাঁচান। আমরা পরিপূর্ণ বিরোধী দল হিসেবে কাজ করতে চাই।

জাতীয় সংসদের ১৯তম ও শীতকালীন অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে হঠাৎ করেই বিরোধী দলীয় নেতা প্রধানমন্ত্রীর প্রতি এ আকুতি জানান।

এ সময় জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সরকারের প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা তার পাশেই বসে ছিলেন। রওশন এরশাদ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের (সরকারে থাকা জাতীয় পার্টির মন্ত্রীদের) মন্ত্রিত্ব নিয়ে নেন। সরকারে দু’একজন মন্ত্রী থাকায় আমরা না বিরোধী দল, না সরকারী দল। মন্ত্রিত্ব নিয়ে নিলে জাতীয় পার্টি বেঁচে যেত।

রওশন এরশাদ আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনিও তো বলতে পারেন না জাতীয় পার্টি সরকারের শরীক না বিরোধী দল। তিনি বলেন, আমাদের নিয়ে বাইরে অনেক কথা হয়। প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছিলাম আমাদের মন্ত্রীগুলো ‘উইথড্র’ করেন। আমাদেরকে বিরোধী দলের মতো বিরোধীতা করতে দেন। কিন্তু সেটা আর হয় নাই। সেজন্য বিরোধী দল হতে পারি নাই। এভাবে টানাটানি করে বিরোধী দল হওয়া যায় না। হয় বিরোধী দল, নয় সরকারি দল।

এসময় রওশন এরশাদ প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে আরো বলেন, হয় বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করতে দেন, নয়তো আমাদের ৪০ জনকে সরকারি দলে নিয়ে নেন। বিরোধী দল দরকার নেই। এসময় প্রধানমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, আমরা তো বলেছিলাম। তখন রওশন এরশাদ বলেন, আপনি নির্দেশ দিলে মানবে না কে? এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাইক ছাড়া হাসতে হাসতে বিরোধী দলীয় নেতার উদ্দেশ্যে কিছু একটা বলেন। জবাবে বিরোধী দলীয় নেতা প্রধানমন্ত্রীকে সংসদে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্য বলেন, আমরা বাদ দিব কেন? আপনিই তো দু’একজনকে মন্ত্রী বানিয়েছেন? কতবার বলেছি এসব নিয়ে নেন। আপনি বাদ দেন। এসময় প্রধানমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, আমি তো বলেছিলাম। বিরোধী দলীয় নেতা বলেন, আপনি নির্দেশ দিলে মানবে না কে? আপনি তো দিলেন না? এসময় প্রধানমন্ত্রী হাসতে হাসতে বলেন, আপনারাই তো নিলেন.. আছেন…। রওশন এরশাদ বলেন, না দেন নাই, দেন নাই, না, না, না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি বলতে পারেন বিরোধী দল আছে? আমরা বলতে পারি না। সেজন্য কোথাও ইন্টারভিউ দেই না। আরো এক বছর আছে, দেখেন সেটা।

রওশন এরশাদ আরও বলেন, আমরা বাইরে গেলে নানা কথা হয়। বলে আপনারা কোথায় আছেন সরকারে, না বিরোধী দলে। আমরা বলতে পারি না। কাজেই এটা যদি করতেন তাহলে জাতীয় পার্টি বেঁচে যেত। জাতীয় পার্টি আজ সন্মানের সাথে থাকতে পারতো। আমরা সন্মানের সাথে নেই।

Share