Current Date:Nov 26, 2024

অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায় যুক্তরাজ্য —ব্রিটিশ হাইকমিশনার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক জাতীয় নির্বাচন দেখতে চায় যুক্তরাজ্য। সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরে এসে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন এমন বার্তাই দিয়েছেন। গতকাল রাজধানীর ব্রিটিশ ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজের এক অনুষ্ঠানে ঢাকায় যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার এলিসন ব্লেক এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বড় একটি বিষয়— এ কথা যুক্তরাজ্য খুব দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে। আর এটাই একটি দেশের সম্ভাব্য সেরা উপায়, যার মাধ্যমে ভবিষ্যৎ সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হয়। সেসঙ্গে এটি এমন একটি সমাজ তৈরি করে, যেখানে সবাই নিজেকে অংশীদার মনে করবে এবং সবার কথা বলার অধিকার থাকবে। এর মাধ্যমেই সমাজ শক্তিশালী হয় এবং জবাবদিহিতা তৈরি হয়।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফর নিয়ে এলিসন ব্লেক বলেন, তিনি (বরিস জনসন) এখানে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে এসেছিলেন। মূলত দুটি কারণে বাংলাদেশ সফর করেছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের মতো দেশগুলোকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার পথে। আমরা বাংলাদেশের এ যাত্রার অংশীদার হতে চাই। আমাদের একে অন্যকে দেয়ার মতো অনেক প্রস্তাবনা রয়েছে।

হাইকমিশনার বলেন, ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের দ্বিতীয় কারণটি ছিল রোহিঙ্গা সংকট। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে অনেক বছর ধরেই আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছি। এর মধ্যে গত বছর সেপ্টেম্বরের পর হঠাৎ করে রাখাইনের পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার কারণে রোহিঙ্গাদের যে স্রোত বাংলাদেশে এসেছে, তা আমরা এড়িয়ে যেতে পারি না। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিশ্বাস করেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এর দায়িত্ব নিতে হবে। এ সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি টেকসই সমাধান হলো, মিয়ানমারে এমন পরিবেশ তৈরি করা, যাতে এ মানুষগুলো ঘরে ফিরে যেতে পারে। তারা যাতে নিরাপত্তা, সম্মানের পাশাপাশি জীবিকা ও অধিকারের সঙ্গে দেশে ফিরতে পারে। সে বার্তাই অং সান সু চি ও মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের দিয়ে গেছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

ঢাকায় দুই বছর কাজ করার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে এলিসন ব্লেক বলেন, বেশ দ্রুতগতিতে কাজের মধ্যেই সময় কেটেছে। বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান হয়েছে, যা দুই দেশের সম্পর্কে গতি এনেছে। সেসঙ্গে জঙ্গিবাদ, যুক্তরাজ্যের ইইউ থেকে প্রস্তানসহ কিছু খারাপ ঘটনাও রয়েছে। তবে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এখনো ঠিক আগের মতোই আছে।

আগামী এপ্রিলে লন্ডনে কমনওয়েলথ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জানিয়ে ব্রিটিশ হাইকমিশনার বলেন, যেহেতু যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে প্রস্থান করছে, সেহেতু কমনওয়েলথ একটি ভালো ক্ষেত্র হতে পারে, যার মাধ্যমে যুক্তরাজ্য তার ঐতিহাসিক বন্ধুদের সঙ্গে আবারো যুক্ত হতে পারবে। এবারের কমনওয়েলথ সম্মেলনে কানেক্টিভিটি, শিক্ষা, বাণিজ্য, সমুদ্র, জলবায়ু পরিবর্তন, দারিদ্র্য দূরীকরণ থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে।

বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের কৌশলগত সংলাপের বিষয়ে তিনি বলেন, গত বছর দুই দেশ কৌশলগত সংলাপ করেছে। এর মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্কের জটিল বিষয়গুলো সমাধানে আলোচনা হয়েছে। আর কৌশলগত সংলাপের একটি ফল হচ্ছে যুক্তরাজ্য কর্তৃক কার্গো নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া। বাংলাদেশ এ সময়ের মধ্যে বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় বেশ এগিয়ে গেছে। অনেকে এটিকে রাজনৈতিক কারণে নিষেধাজ্ঞা ভাবলেও এটি রাজনৈতিক কোনো নিষেধাজ্ঞা ছিল না।

Share