নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকার বিচার কাজে হস্তক্ষেপ করে না, খালেদা জিয়ার চার মাসের জামিনের মধ্য দিয়ে তা আবারও প্রমাণিত হলো বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। সোমবার হাইকোর্টে খালেদা জিয়ার জামিন আদেশের পর সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে দুপুরে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চার মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন আদালত।
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়ায় আনিসুল হক বলেন, ‘বিএনপি নেতারা সারাদেশে বলে বেড়াচ্ছিলেন আমরা নাকি আদালতে ইন্টারফেয়ার (হস্তক্ষেপ) করছি বলে বেইলটা (জামিন) হচ্ছে না। আজকে প্রমাণিত হলো, বিচার বিভাগ যে স্বাধীন এবং বিচার কাজে সরকার হস্তক্ষেপ করে না।’
তিনি বলেন, ‘আগে সবসময় থাকত রাষ্ট্র বনাম আসামি। ২০০৪ সালে বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল দুর্নীতি দমন আইন পাস করা হয়েছিল। ২০০৭ পর্যন্ত যেটার কোনো কার্যক্রম হয়নি। সেই দুর্নীতি দমন আইনে বলা আছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) হবে পক্ষ, রাষ্ট্র উইল বি দ্য সেকেন্ড পার্ট। তাহলে এখন দাঁড়ায় দুর্নীতি দমন কমিশন বনাম আসামি খালেদা জিয়া। এরপর কর্মপন্থা বা কী করবেন সেই সিদ্ধান্ত তারা নেবে দুদক। এটা সরকারের ব্যাপার নয়।’
‘সরকারকে বা অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসকে হয়তো তারা অবগত করতে পারেন। সেক্ষেত্রে তাদের (দুদক) ব্যাপার এটা।’
পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া কী হবে- জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘এখন প্রসিডিউর হচ্ছে…আমি এটাও শুনি নাই হাইকোর্ট কি রিটেন অর্ডার দিয়েছে। যদি রিটেন অর্ডার থেকে থাকে আপনারা জানেন আমি একজন আইনজীবী….তো সেক্ষেত্রে সার্টিফাইড কপি যদি ওনারা (আদালত) বলে থাকেন অ্যাডভান্স অর্ডারের সার্টিফাইড কপি চলে যাওয়ার তাহলে অ্যাডভান্স অর্ডারের সার্টিফাইড কপি যাবে। আর যদি ওনারা বলে থাকেন আমরা সার্টিফাইড কপি দিলে পড়ে, তবে সেই আদেশ যতক্ষণ পর্যন্ত না জেলখানায় পৌঁছে আদালতের মাধ্যমে ততক্ষণ পর্যন্ত তাকে রিলিজ করা হবে না।’
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের দণ্ড নিয়ে খালেদা জিয়া গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে রয়েছেন। ওইদিন (৮ ফেব্রুয়ারি) জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন পুরান ঢাকার আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নং বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামান। একই সঙ্গে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অপর পাঁচ আসামিকে ১০ বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত।
রায় ঘোষণার ১১দিন পর গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকেলে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা রায়ের সার্টিফায়েড কপি হাতে পান। পরের দিন জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার হাজিরার জন্য আবেদন করা হয়। গতকাল (রোববার) নিম্ন আদালতের রায়ের নথি হাইকোর্টে পৌঁছালে আজ জামিনের বিষয়ে আদেশ দেন আদালত।