প্রযুক্তি ডেস্ক : চলতি বছরের সবচেয়ে বড় বোমাটা ফাটালেন বিখ্যাত এক প্রতিষ্ঠানের অখ্যাত ডাটা অ্যানালিস্ট ক্রিস্টোফার উইলি। নিজেকে হুইসেলব্লোয়ার দাবি করা ক্রিস্টোফার জানিয়েছেন, ব্রিটিশ ডাটা অ্যানালিস্ট প্রতিষ্ঠান ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা মার্কিন নির্বাচনের সময় পাঁচ কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য ঘেঁটেছে।
এরপর হৈ চৈ পড়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বজুড়ে। জবাব চাইছেন আটলান্টিক মহাসাগরের দুই পাড়ের আইনপ্রণেতারাও।
ম্যাসাচুসেটসের অ্যাটর্নি জেনারেল মাওরা হিলি শনিবার ঘোষণা দিয়েছেন, তার অফিস ফেসবুক ও ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করবে।
মিনেসোটার ডেমোক্রেট আইনপ্রণেতা অ্যামি ক্লোবুচার তার টুইটে লিখেছেন, জাকারবার্গকে সিনেটের জুডিশিয়ারি কমিটির সামনে সাক্ষ্য দিতে হবে।
অন্যদিকে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হাউজ অব কমন্সের ডিজিটাল, কালচার, মিডিয়া ও স্পোর্টস কমিটি বিভিন্ন কোম্পানিকে ডাটা দেয়া নিয়ে ফেসবুকের নীতির বিষয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। জানিয়েছেন ওই কমিটির চেয়ারপারসন ড্যামিয়ান কলিন্স এমপি।
তিনি বলেন, আমি মার্ক জাকারবার্গকে বা ফেসবুকের শীর্ষ কোনো কর্মকর্তাকে কমিটির সামনে হাজির হয়ে সাক্ষ্য দেয়ার জন্য চিঠি লিখবো।
আগুন লেগেছে ফেসবুকের শেয়ারেও
এদিকে তথ্য পাচার হয়ে গেছে এমন খবরের পর সোমবার শেয়ারবাজারে চার হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে ফেসবুকের। দরপতনের হার ফেসবুকের শেয়ারদর সাত শতাংশ কমে গেছে। যা শতাংশের হিসেবে গেলো চার বছরে মধ্যে সবচেয়ে বড় দরপতন।
ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা কী কাজ করে?
লন্ডনভিত্তিক ডাটা প্রতিষ্ঠান ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা। ডাটা ব্যবহার করে তারা অডিয়েন্সের আচরণ পরিবর্তন করে। ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান স্ট্র্যাটিজিক কমিউনিকেশন ল্যাবরেটরিজের (এসসিএল) সহযোগী প্রতিষ্ঠান ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণায় সাহায্য করে আলোচনায় আসে। এর আগে অবশ্য তারা আরেক প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী টেড ক্রজের হয়ে প্রচারণায় অংশ দেয় ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা।
কীভাবে আলোচনার সূত্রপাত?
ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম চ্যানেল ফোরকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকার সিইও অ্যালেকজান্ডার নিক্স বলেন, তার প্রতিষ্ঠান রাজনীতিকদের ফাঁদে ফেলতে ঘুষ ও নারী কেলেঙ্কারি মতো বিষয়ে জড়িয়েছে। ওই সাংবাদিকরা সম্ভাব্য শ্রীলঙ্কান ক্লায়েন্ট হিসেবে ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকার অফিসে যাওয়ার পর গোপন ক্যামেরায় ধারণ করা ভিডিওতে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস হয়।
ফেসবুকের ভবিষ্যৎ কী?
অভিযোগটা আগেও ছিল যে ফেসবুক নজরদারি করছে। কিন্তু সেটির ওই অর্থে কাগজে-কলমে শক্ত কোনো প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছিল না। কিন্তু ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকার এই কেলেঙ্কারিতে পুরনো বিতর্কের পালে আবারও হাওয়া লাগলো। দাবি উঠেছে নতুন আইনের। কিন্তু নতুন আইন হলেও খুব একটা পরিবর্তন হয়তো হবে না ফেসবুকের। তাই তথ্য চুরির আশঙ্কাটা থেকেই যাচ্ছে।