Current Date:Nov 28, 2024

মওদুদকে সরে দাঁড়াতে বললেন খালেদা জিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক : খালেদা জিয়ার মামলার কার্যক্রম পরিচালনার প্রক্রিয়ার সঙ্গে আর যুক্ত থাকতে পারছেন না দলের অন্যতম নীতিনির্ধারক ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। দলের এই স্থায়ী কমিটির সদস্যকে তার সব মামলার কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন খালেদা জিয়া। অর্থাৎ এখন থেকে বেগম জিয়ার মামলায় মওদুদ আহমদকে দেখা যাবে না। তবে দলীয় কার্যক্রমে স্বাভাবিকভাবেই অংশগ্রহণ করতে পারবেন তিনি। বিএনপির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

রবিবার খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার ৬ আইনজীবী দেখা করতে গেলে তিনি তাদের এ ব্যাপারে নির্দেশনা দেন। গত কিছুদিন ধরে মামলার কার্যক্রম পরিচালনা নিয়ে দলের আইনজীবীদের দ্বন্দ্ব-কোন্দলের মধ্যে এ কঠোর নির্দেশনা এলো।
এ ছাড়া গাজীপুর ও খুলনাসহ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে কিনাÑ এ বিষয়ে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে নেতাদের নির্দেশ দেন।

এ পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামসহ কয়েক নেতা বেগম জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বলেও জানা গেছে।

খালেদা জিয়ার মামলা পরিচালনার দায়িত্বে থাকা আইনজীবী ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, অ্যাডভোকেট আবদুর রেজাক খান, অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, অ্যাডভোকেট এজে মোহাম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ওইদিন বিকালে বিএনপিপ্রধানের সঙ্গে দেখা করতে নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কারাগারে যান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন আমাদের সময়কে বলেন, মামলার আইনগত বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তার মামলায় জামিন হচ্ছে না কেন? তা জানতে চেয়েছেন। আমরা আদালতের বিষয়গুলো বলেছি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাজনৈতিক বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।

সূত্র জানিয়েছে, খালেদা জিয়ার মনোভাব দেখে মনে হয়েছে, তিনি আইনজীবীদের ওপর কিছুটা অসন্তুষ্ট। কথা বলার সময় কয়েকবার রাগান্বিত হয়েছেন। তার মামলা পরিচালনায় ভুল হচ্ছে কিনা বার বার জানতে চেয়েছেন।
এক পর্যায়ে বেগম জিয়া তার মামলার আইনি সব কার্যক্রম থেকে মওদুদ আহমদকে বিরত রাখার নির্দেশ দিয়ে বলেন, তার এবং তারেক রহমানের সব মামলার আইনি কার্যক্রমের বাইরে থাকবেন তিনি। এ সময় বেগম জিয়া এ-ও বলেন, মওদুদ আহমদ দলীয় কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চালাতে পারবেন।

এ বিষয়ে গতকাল সন্ধ্যায় আমাদের সময়ের সঙ্গে দলের এক দায়িত্বশীল নেতার আলাপ হয়। ওই নেতা বলেন, বেগম জিয়া এমন নির্দেশনা কেন দিলেন তা জানি না। তবে এটুকু বলতে পারি, মওদুদ আহমদকে নিয়ে এখন সন্দেহ করার কিছু নেই। তিনি বেগম জিয়ার ওপর শতভাগ আস্থা রেখে দলীয় কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। আমি অন্ততপক্ষে তাকে ‘ষড়যন্ত্রে’ লিপ্ত বলে মনে করি না। তবু দলীয় চেয়ারপারসন ভালো জানেন। তিনি জেনে-বুঝে হয়তো সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।

দলের কেউ কেউ বলছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন কারাগারে যাওয়ার পর থেকে সিনিয়র কয়েক নেতার সঙ্গে তার ভুল বোঝাবুঝি শুরু হয়। দলীয়প্রধানের মুক্তির দাবিতে চলমান আন্দোলনের প্রথম দুই কর্মসূচির ব্যাপারে তাকে জানানোই হয়নি।

এ পরিপ্রেক্ষিতে আলোচনার এক পর্যায়ে মামলা পরিচালনার দায়িত্বে কে কে থাকবেন তা জানতে চাইলে বেগম জিয়া বলেন, খন্দকার মাহবুব হোসেন এবং এজে মোহাম্মদ আলী। এ সময় খন্দকার মাহবুব বলেন, ‘আমি, জয়নুল আবেদীন এবং মাহবুব উদ্দিন খোকন মামলা পরিচালনা করতে চাই।’ তখন বেগম জিয়া ফের নির্দেশ দেন, মাহবুব হোসেন এবং এজে মোহাম্মদ আলী মামলা পরিচালনা করবেন। এ সময় খন্দকার মাহবুব আবারও তার কথা পুনরায় উল্লেখ করলে বেগম জিয়া একটু বিরক্তি প্রকাশ করেন।

Share