Current Date:Oct 7, 2024

আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল শিবিরে শঙ্কার কালো মেঘ!

স্পোর্টস ডেস্ক : কি হবে? প্রথম রাউন্ডের বাধা পার হতে পারবে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল? নাকি এখানেই থেমে যাবে যাত্রা! জটিল সমীকরনের আশঙ্কায় ভুগছে এই দুই দলের সমর্থকরা। বিশ্বকাপের মঞ্চে অন্যতম ফেবারিট দুই দল আর্জেন্টিনা ব্রাজিলের প্রথম খেলা হতাশ করেছে। সেই সাথে আশঙ্কাও যোগ হয়েছে। তুলনামূলক সহজ প্রতিপক্ষের সাথে প্রথম ম্যাচটি কেউই জিততে পারেনি। আর্জেন্টিনা ড্র করেছে আইসল্যান্ডের সাথে। আর ব্রাজিল ড্র করেছে সুইজারল্যান্ডের সাথে। অথচ তাদের প্রথম লক্ষ্যই ছিলো জয় নিয়ে পয়েন্টে এগিয়ে থেকে ২য় রাউন্ডে যাওয়ার পথ সহজ করে রাখা। কিন্তু এখন সেটা অতীত। সহজ হিসেব কঠিন হতে শুরু করেছে।

প্রথম রাউন্ডে সামনে আছে দুটি করে খেলা। এই দুটি খেলাতেই জিততে হবে তাদের নইলে সমীকরন আরো কঠিন হয়ে উঠবে। দ্বিতীয় রাউন্ড যদি নির্বিঘ্নে পার করতে হয় তাহলে দুটি ম্যাচই জয় দরকার। তা নাহলে গ্রুপের অন্যদের জয় পরাজয়েন সমীকরনের সাথে জড়িয়ে যাবে আর্জেন্টিনার ভাগ্যও।

২১ জুন বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায় মাঠে নামবে আর্জেন্টিনা। প্রতিপক্ষ ক্রোয়েশিয়া। ৯৮ সালের বিশ্বকাপে নিজেদেরকে বেশ ভালো করেই চিনিয়েছিলো ক্রোয়েশিয়া। নিজেদের অভিষেক বিশ্বকাপে শুধু সেমিফাইনালেই যায়নি, তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে নেদারল্যান্ডকে হারিয়ে তৃতীয় হয় তারা। এবার ৫ম বারের মতো বিশ্বকাপে অংশ নেয়া ক্রোয় শিয়া বেশ ফর্মে আছে। নিজেদের প্রথম ম্যাচে নাইজেরিয়াকে ২-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়েছে ক্রোয়েশিয়া। ফলে বেশ চাঙ্গা আছে দলটি। এখন পর্যন্ত পয়েন্ট তালিকায় ডি গ্রুপের শীর্ষে আছে ক্রোয়েশিয়া। তাই বাড়তি চাপ একটু কমই। অন্যদিকে আর্জেন্টিনা তাদের প্রথম ম্যাচ ড্র করায় বাড়তি চাপে আছে। সাম্পাওলির শিষ্যরা চেয়েছিলো প্রথম ম্যাচেই দুর্দান্ত শুভ সূচনা করতে। কিন্তু ফলাফল হয়েছে উল্টো। তারপর উপর দলের কান্ডারী এবং প্রধান ভরসা মেসির পেনাল্টি শট মিস…! সব মিলিয়ে হতাশা আর ভাগ্যদেবতার বিরুপ ছায়ার দেখা পেয়েছে আর্জেন্টিনা। ক্রোয়েশিয়ার সাথে আর্জেন্টিনার পরাজয়ের কোন সুযোগ নেই। তেমনটা ঘটলে প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায়ের দরজা খুলে যাবে আর্জেন্টিনার জন্য। অতএব এই ম্যাচটি হবে অনেকটা ‘ডু অর ডাই ম্যাচ’ আর্জেন্টিনার জন্য। এরপরের খেলা ২৬ জুন নাইজেরিয়ার সাথে। সুপার ঈগল খ্যাত নাইজেরিয়াকেও হেলা করার সুযোগ নেই। যেকোনো অঘটন ঘটানোর ক্ষমতা এদের আছে। বিশ্বকাপে বাছাই পর্বে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ান হয়েই জায়গা করে নিয়েছে বিশ্বকাপ মিশনে। আর এসব কারণেই ‘ডি’ গ্রুপকে ডেথ গ্রুপ হিসেবে ডাকা হচ্ছে।

অতএব ডেথ গ্রুপে আর্জেন্টিনার পথ সামনে বেশ কঠিন। নিজেদের সেরা খেলাটা খেলতে না পারলে প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায়ের লজ্জা নিয়েই ফিরতে হবে দেশটিকে।

অন্যদিকে বিশ্বকাপের আরেক ফেবারিট ব্রাজিলও ভালো নেই। ব্রাজিলের শিবিরেও শঙ্কা আর বিষাদের মেঘ ভর করেছে। নিজেদের প্রথম ম্যাচে ব্রাজিল কী তাদের খেলাটা খেলতে পেরেছে? ভালো খেলেছিলেন? উত্তরটা হবে না। ব্রাজিল তাদের নিজস্ব ছন্দে জেগে উঠতে পারেনি। সেই সাথে নেইমারের মতো তারকাও মেলে ধরতে পারেনি নিজেকে। প্রথম ম্যাচটা ড্র করে ব্রাজিল দলও মাঠ ছেড়েছে একরাশ হতাশা নিয়ে।

২২ জুন ব্রাজিল মাঠে নামবে কোস্টারিকার বিরুদ্ধে। তুলনামূলক দুর্বল দল কোস্টারিকা। তবে গত বিশ্বকাপের দিকে তাকালে এই দলটি চমকে দেয়ার ক্ষমতা যে ভালোভাবেই রাখে, ইতিহাস সেটাই বলবে। ডেথ গ্রুপ খ্যাত ডি গ্রুপে ইতালি, ইংল্যান্ড আর উরুগুয়ের বিপরীতে পরেছিলো দলটি। তবে সবাইকে অবাক করে দিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ২য় রাউন্ডে পৌঁছায় কোস্টারিকা। এবার সার্বিয়ার সাথে প্রথম ম্যাচে খুব একটা ভালো না করলেও ব্রাজিলের সাথে যদি আবার নিজেদের চমকিত শক্তি ফিরে পায় তাহলেই অঘটন ঘটে যেতে পারে। আর এই মুহূর্তে যেকোনো অঘটন বিশ্বকাপ থেকে বিদায় করে দিতে পারে ব্রাজিলকেও। আর তাই কোস্টারিকার সাথে জয় ছাড়া বিকল্প নেই। কারণ পরের ম্যাচটিই সার্বিয়ার সাথে। বেশ কিছু ভালো তারকা খেলোয়ার আছে এবারের দলে। যদি তারা ঝলসে ওঠেন আর নেইমাররা ছন্দহীন হয়ে পরেন তাহলে বিদায়ী ঘণ্টাটা ব্রাজিলের জন্য সার্বিয়াও হয়ে উঠতে পারে।

ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা প্রথম ম্যাচে জয় না পাওয়ায় স্বভাবতই চাপের বোঝা আরো একটু চাপালো নিজেদের কাঁধে। আর এই চাপটা এখন ব্রাজিলের চেয়ে আর্জেন্টিনার কাঁধে কয়েকগুন বেশি ওজন হয়ে চেপে বসে আছে।

Share