অনলাইন ডেস্ক : বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, জাল নথির ওপর ভিত্তি করে সাজানো মামলায় প্রতিহিংসামূলক বিচারে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে কারাগারে বন্দি করা হয়েছে। এ মামলাতে বেগম জিয়ার বিন্দুমাত্র কোন সম্পর্ক নেই। মূলত সরকার প্রধানের নির্দেশেই বেগম জিয়া কারাগারে। আর এই বন্দিশালার চাবি রয়েছে সরকারের হাতে, অন্য কোথাও নয়।
শনিবার দলের নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, সরকার গণদাবিকে সুনজরে দেখেন না বলেই জনগণের অধিকারের প্রশ্নে সোচ্চার বেগম জিয়াকে বন্দি করেছেন। এই বন্দিশালা সরকারের হুকুমে পরিচালিত হয়, কোন আইনের দ্বারা পরিচালিত হয় না বলেই বেগম খালেদা জিয়া সুচিকিৎসা পাচ্ছেন না, কারাবিধি অনুযায়ী স্বজনরা তাঁর সাথে সপ্তাহে একদিন দেখাও করতে পারছেন না। কারাগারে তার ওপর জুলুমের তীব্রতার মাত্রা নিশ্চিত করতে সরকার সবসময় খবর নিচ্ছেন।
রিজভী বলেন, ১/১১ এর সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পাঁচটি মিথ্যা মামলা দিয়েছে বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে। আর বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দিয়েছিল পনেরটি। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী বেগম জিয়ার মামলা যদি সত্য হয়, তাহলে তার ১৫ টা মিথ্যা হবে কেন ? এসব মামলা মিলিয়ে তো তার একশো বছরের বেশি জেল হবার কথা। সিটি নির্বাচন নিয়ে রিজভী বলেন, আগামী তিন সিটি নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীন মহল একটা ধুলিঝড়ের সৃষ্টি করে মূলত: খারাপ কোন চক্রান্তে মেতে আছে। আসলে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী সাধারণ ভোটারদের অধিকার ফিরে পাওয়াকে অপরাধ হিসেবে গন্য করে, সেজন্য তারা ভোট সন্ত্রাস ও ভোট কারচুপির নতুন নতুন মডেল আবিস্কার করে যাচ্ছে। তিন সিটিতে নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর পর থেকেই নৌকা মার্কার প্রার্থীদের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অসংখ্য অভিযোগ আসতে থাকে। আবার পাশাপাশি বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোট প্রার্থী এবং সমর্থক ও কর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান এক চরম পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। খুলনা-গাজীপুর নির্বাচনের মতোই আসন্ন তিন সিটি নির্বাচনে বিরোধী দলের ভোটার ও পোলিং এজেন্ট শুন্য করার এক অভিনব কৌশল অবলম্বন করেছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, সরকারের নির্দেশে তিন সিটি কর্পোরেশনে একপেশে নির্বাচন করার ডিজাইনারের কাজ করে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন ও পুলিশ প্রশাসন। নির্বাচন কমিশন যে সরকারের হাতের মুঠোয় সেই প্রমাণ নিজেরাই রেখে যাচ্ছে, যেমন তিন সিটিতে তফশীল ঘোষণার পর বিনা ওয়ারেন্টে কাউকে গ্রেফতার না করার প্রজ্ঞাপণ জারির উদ্যোগ নিয়েছিল ইসি। কিন্তু পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আপত্তির মুখে সেই উদ্যোগ থেকে সরে আসে কমিশন। প্রচারণা শুরুর পর থেকেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে আগ্রাসী আক্রমণ চালাচ্ছে।
আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সংসদ ভেঙ্গে দিতে হবে, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দিয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে। তবেই কেবল মাত্র সংলাপ হতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মেহেদী হাসান রুমি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।