নারীর সমতা, ক্ষমতায়ন ও অগ্রগতি নিশ্চিত করতে অঙ্গীকার নবায়ন ও প্রচেষ্টা জোরদার করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশে কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ ৫০ শতাংশে উন্নীত করার অঙ্গীকার করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (০১ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় রাতে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৫তম বার্ষিক অধিবেশনের সাইডলাইনে ‘ফোর্থ ওয়ার্ল্ড কনফারেন্স অন ওমেন’-এর ২৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক উচ্চ পর্যায়ের ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২০৪১ সাল নাগাদ কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ ৫০-৫০ এ উন্নীত করার অঙ্গীকার করতে চাই।
তিনি বলেন, প্রতিটি মেয়ের কাছ থেকে বিশ্ব উপকৃত হতে পারে যার সম্ভাবনা ইতোমধ্যে উপলব্ধি করা গেছে, প্রতিটি নারী যাদের মেধা অবিকশিত এবং কেবল শিক্ষার মাধ্যমেই এর বিকাশ ঘটানো সম্ভব।
আয় ও কর্মসংস্থানের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন সৃষ্টি হয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, আয় এবং কর্মসংস্থানের মাধ্যমেই ক্ষমতায়ন সৃষ্টি হয়। তাই আয়বর্ধক কর্মকাণ্ডে নারীদের সম্পৃক্ত করার বিষয়টি অগ্রাধিকার পাওয়া উচিৎ।
কোভিড-১৯ মহামারি বিশেষ করে নারীদের ঝুঁকি বাড়ার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহামারির এই সময়ে নারীরা বৈষম্য এবং বেড়ে যাওয়া পারিবারিক সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। এ কারণে নারীর ক্ষমতায়নে আমাদের কষ্টার্জিত অর্জন হুমকির মুখে।
নারী ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের অগ্রগতির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের জেন্ডার গ্যাপ ইনডেক্স অনুসারে, আমরা নারীদের সামগ্রিক ক্ষমতায়নে দক্ষিণ এশিয়ায় নেতৃত্ব দিচ্ছি। ১৪৯টি দেশের মধ্যে বিশ্বব্যাপী পঞ্চম স্থানে এবং রাজনৈতিক ক্ষমতায়ণে ৭ম স্থানে রয়েছে। আমাদের আরও অনেক কিছু করার আছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা শিক্ষার পাশাপাশি নারীর অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের উপর জোর দিয়েছি। আমরা নারীদের আমাদের উন্নয়নের সক্রিয়কর্মী হিসেবে বিবেচনা করি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন ৫০টিতে উন্নীত করা হয়েছে। সংসদ নেতা, সংসদীয় উপনেতা, বিরোধী দলীয় নেত্রী ও স্পিকার নারী। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় ৩০ শতাংশ আসন মহিলাদের জন্য নির্ধারণ করে রাখা হয়েছে। আর জনসেবাতে নারীর প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর জন্য বিশেষ বিধান রাখা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের নারীরা এখন উচ্চ আদালতের বিচারক, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং আরও অনেক কিছু হয়ে উঠছেন। জেন্ডার বাজেটিং, মাইক্রো ফাইনান্স এবং অনুরূপ উদ্যোগগুলো মহিলাদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করেছে।