কোটা নিয়ে অগ্রগতি নেই : মন্ত্রিপরিষদ সচিব

0
127

নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল বা সংস্কারের বিষয়ে কোনো অগ্রগতি নেই বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।

তবে এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় শিগগিরই একটি কমিটি করবে বলে আশা করছেন তিনি।

তবে কতদিনের মধ্যে সেই কমিটি হতে পারে সে বিষয়ে কোনো ধারণা দিতে পারেননি মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

তিনি বলেন, এ বিষয়ে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এখনও কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি।

সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সাংবাদিকরা কোটার বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এ কথা জানান।

তিনি বলেন, কোটা নিয়ে (সোমবারের মন্ত্রিসভা বৈঠকে) কোনো আলোচনা হয়নি, অগ্রগতিও নেই, যে অবস্থানে ছিল তাই আছে।

কোটা পদ্ধতি মূল্যায়নের বিষয়ে কমিটি গঠনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের কাছে এখনও (কমিটি গঠনের প্রজ্ঞাপন) পৌঁছায়নি। আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে এটার অগ্রগতি জানাতে বলেছি। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে (কমিটির) প্রজ্ঞাপন জারি হলে আমাদের কাছে আসবে, আমরা তখন কমিটি নিয়ে বসব।

শিগগির প্রজ্ঞাপন জারি হবে কিনা জানতে চাইলে শফিউল আলম বলেন, আশা করি, আশা করি। অনেক দিন বন্ধ ছিল এবং প্রধানমন্ত্রী দেশের বাইরে ছিলেন। কাজেই ওই বিষয়ে খুব বেশি কাজ আগায়নি।

তিনি বলেন, কমিটি গঠন হবে, বসবে। আলোচনা করে যেটা ভালো হয় সেটা করা হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কমিটি নিশ্চিত করবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে কমিটি হবে। কমিটির বাকি সদস্য কারা হবে সেটা জনপ্রশাসন ঠিক করবে।

এদিকে কোটাপ্রথার সংস্কারে সরকারের প্রজ্ঞাপন জারির বিষয়ে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন আন্দোলনকারীরা।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্লাটফর্ম সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কোটা সংস্কারে প্রজ্ঞাপন জারির বিষয়ে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেয়া হবে।

গত ৮ এপ্রিল থেকে পাঁচ দিন ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের প্রায় সব পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করেন।

পর দিন সচিবালয়ে দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠক করেন আন্দোলনকারীরা।

বৈঠক শেষে মন্ত্রী বলেন, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে তাদের অত্যন্ত সুন্দর আলোচনা হয়েছে। আমরা তাদের বলেছি- আগামী ৭ মের মধ্যে সরকার বিদ্যমান কোটার বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে। সেই পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত থাকবে।

এ সময় সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুনও ৭ মে পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন।

এ ঘোষণার পর ৯ এপ্রিল রাতে আন্দোলন স্থগিত হয়ে যায়। তবে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর এক বক্তব্য কেন্দ্র করে ১০ এপ্রিল থেকে ফের আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। তারা কোটা সংস্কারের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে সিদ্ধান্ত আসার দাবি জানান।

পরে ১১ এপ্রিল জাতীয় সংসদের অধিবেশনে কোটা পদ্ধতি বাতিল ঘোষণা করে সব চাকরিতে শতভাগ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পর দিন শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে আনন্দ মিছিল বের করেন।

এর দুই সপ্তাহ পর গত ২৬ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করে কোটা বাতিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশের দাবি জানান আন্দোলনকারী। না হলে ফের আন্দোলনে নামার ঘোষণা দেন তারা।

পর দিন ২৭ এপ্রিল আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানকের সঙ্গে বৈঠকে বসেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের ১৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল।

সর্বশেষ গত ২ মে সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে কোটা বাতিলের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো ধরনের ক্ষোভ থেকে সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। ছাত্ররা কোটাব্যবস্থা বাতিল চেয়েছে, বাতিল করে দেয়া হয়েছে।