Current Date:Nov 25, 2024

জামায়াত নিয়ে তবুও আশায় বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক : ভোট থেকে সড়ে দাঁড়ানোর সুযোগ নেই তারপরও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জোটসঙ্গী জামায়াতের সমর্থন পাওয়ার আশা ছাড়ছে না বিএনপি। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শরিক জোটের বৈঠকে দলটিকে এই অনুরোধ করেছেন। বলেছেন, ঐক্যের স্বার্থে যেন জামায়াত ভোট থেকে সরে দাঁড়ায়।

শনিবার বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ২০ দলের বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপি নেতা।

তবে জামায়াত এই বৈঠকে কনিষ্ঠ একজন নেতাকে পাঠায়। তার তিনি জোট নেতাদের বার্তা তার দলের শীর্ষ পর্যায়ে পৌঁছে দেয়ার কথা জানান।

ফখরুল এমনও বলেছন, সিলেটে শেষ অবধি জামায়াত ভোটে থাকলেও তাতে জোটের ঐক্যে প্রভাব ফেলবে না এবং জাতীয় নির্বাচনে দুই দল এক হয়েই লড়বে।

সিলেটে বিএনপিকে চ্যালেঞ্জ করে জামায়াত নেতা এহসানুল মাহবুব জুবায়ের মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছেন। গত ৪ জুলাই বিএনপির পক্ষ থেকে জোটের পক্ষ থেকে একক প্রার্থী দেয়ার ঘোষণা এলেও জামায়াতকে বাগে আনতে ব্যর্থ হয় তারা। আর ৯ জুলাই প্রার্থিতা প্রত্যাহারের দিন শেষে হয়ে যায়। জামায়াত নেতা জুবায়ের সেখানে পেয়েছেন টেবিল ঘড়ি প্রতীক।

সিলেটের এই বিভেদ রাজশাহীতেও পড়েছে। সেখানে জামায়াত মেয়র পদে প্রার্থী না দিলেও তাদের ১৬ জন কাউন্সিলর প্রার্থীকে সমর্থন দেয়ার দাবি জানিয়েছিল বিএনপির কাছে। বিএনপি রাজি না হওয়ায় তাদের মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের পক্ষে নামছে না জোট নেতারা।

জামায়াতের এই ‘বিদ্রোহ’ রাজনীতিকে বিএনপির জন্য নেতিবাচক হতে পারে, সেটি ফখরুল স্বীকার করেছেন বিবিসির সঙ্গে সাক্ষাতে।

তবে জোট নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিএনপি বলেন, ‘দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে জামায়াতে ইসলাম ২০ দলের প্রার্থী হিসেবে আরিফুল ইসলামকে সমর্থন করবে। তারা বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি।’

সিলেটে বিএনপি-জামায়াত প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও জোটের মাঝে কোনো বিভেদ নাই বলেও দাবি করেন ফখরুল। বলেন, ‘সিলেট সিটিতে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হচ্ছে, এটি নিয়ে ঐক্য নষ্ট হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। এটি জাতীয় নির্বাচনে কোনো প্রভাব ফেলবে না। আমরা আশা করি সিলেটে জামায়াত বিএনপি প্রার্থীকে সমর্থন দেবে। আমাদের ঐক্য অটুট আছে।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ২০ দলের সমন্বয়কারী নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আজ জোটের মূল আলোচনা ছিল সিলেটের মেয়র নির্বাচনে জামায়াতের প্রার্থীর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সেখানে এখনও তাদের প্রার্থী আছে। আমরা বসে নেই,এখনও তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।’

‘জামায়াতের মোবারক হোসাইন (বৈঠকে দলটির প্রতিনিধি) আছেন। কিন্তু তার সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার নেই। আমাদের অনুরোধটি তার দলের নেতাদের অবহিত করবেন। তারা যে সিদ্ধান্ত নেবেন সেটিই সিদ্ধান্ত হবে।’

‘আমরা বিএনপিসহ জোটের নেতারা জামায়াত ইসলামকে অনুরোধ করে গণতন্ত্র, ঐক্য ও জাতির স্বার্থে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছি। আমরা আশা করব, জোটের প্রার্থীর বিজয় ও ঐক্যের কথা বিবেচনা করে তারা সিদ্ধান্ত নেবেন।’

সংবাদ সম্মেলনে শেষে জামায়াতের কর্ম পরিষদের সদস্য মোবারক হোসাইন বলেন, ‘শরিকরা জামায়াতের প্রার্থী প্রত্যাহারের অনুরোধ করেছেন। আমি দলের নীতি-নির্ধারকদের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দেব।’

গত ১২ জুলাই কুমিল্লার চান্দিনা রেদোয়ান আহমেদ কলেজ রোডে এলডিপির চেয়ারম্যান অলি আহমেদের গাড়িতে হামলারও নিন্দা জানান নজরুল। বলেন, ‘সেখানে পুলিশ ছিল, তারা সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। …এমন হামলায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়েছেন ২০দলীয় জোটের শরিক নেতারা।’

‘যারা এই ঘটনার সাথে জড়িত তাদের মধ্যে ভিডিও ফুটেজ দেখে ১১জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে । এই ফুটেজ দেখে ২০দলীয় জোট দাবি করে অবিলম্বে তাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হোক। পুলিশের যে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে সে বিষয়ে ও তদন্ত করা উচিত।’

বৈঠকে বিজেপি আন্দালিব রহমান পার্থ, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমদ, এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমদ, জাতীয় পার্টির আহসান হাবীব লিঙ্কন, লেবার পার্টির একাংশের সভাপতি ফরিদুজ্জামান ইরান, খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব গোলাম আজগর, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামীর মহিউদ্দিন ইকরাম অংশ নেন।

 

Share