‘বিএনপি সকাল-বিকাল সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে’
অনলাইন ডেস্ক : বিএনপি সকাল-বিকাল সরকারের বিরুদ্ধে বিষদগার ও মিথ্যাচার করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং দলের অন্যতম মুখপাত্র ড. হাছান মাহমুদ এমপি। এ সময় তিনি বিএনপি নেতৃবৃন্দকে অশোভন বক্তব্য পরিহার ও রাজনৈতিক শালীনতা-ভব্যতা মেনে চলারও অনুরোধ জানান।
আজ বৃহস্পতিবার (১৯ জুলাই) দুপুরে ধানমণ্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ২০০২ সালে আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিআরআই অফিস বন্ধ করে দিয়েছিল এবং সুধাসদনের অফিসটি তল্লাশি করে তছনছ করে তালা লাগিয়ে দিয়েছিল তৎকালীন বিএনপি সরকার। ২০০১ সালের ১৫ জুন নারায়নগঞ্জে আওয়ামী লীগ অফিসে বোমা হামলা চালিয়ে ২২ জনকে হত্যা করা হয়েছিল। পরবর্তীতে ওই ঘটনার সাথে বিএনপির সম্পৃক্তা প্রমাণিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ অফিসে বারবার হামলা করা হয়েছে। জেলার নেতাদের সাথে আওয়ামী লীগ সভাপতির মিটিংয়ে পুলিশি হামলা করা হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, বেগম মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিমসহ আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের রাস্তায় ফেলে পেটানো হয়েছিল। প্রেসক্লাবের সামনে সোহেল তাজকে পিটিয়ে কাপড়-চোপড় ছিড়ে দেওয়া হয়েছিল। জনসভায় প্রকাশ্যে বোমা হামলা চালিয়ে আহসান উল্লাহ মাস্টার এমপিকে হত্যার পর সংসদে একটি শোক প্রস্তাবও আনতে দেওয়া হয়নি।
অথচ আওয়ামী লীগের সময়ে বিএনপির কোনও জনসভায় হামলা হয়নি বলেও দাবি করেন হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, গত সাড়ে নয় বছরে বিএনপির কোন জনসভায় হামলা হয়নি। তাদের (বিএনপির) কোন সিনিয়র নেতাকে রাস্তায় পুলিশের পিটুনি’র শিকার হতে হয়নি।
একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলার কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এই মুখপাত্র বলেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে প্রকাশ্যে আমাদের নেত্রীকে হত্যা করার উদ্দ্যেশ্যে তৎকালীন সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা ও তারেক জিয়ার নির্দেশনায় যেভাবে গ্রেনেড হামলা পরিচালনা করা হয়েছিলো তা ইতিহাসের কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে লিপিবদ্ধ হয়ে থাকবে। বিএনপির ক্ষেত্রে তো এ কোন ধরনের হামলার ঘটনা ঘটে নাই। সুতরাং আজকে বিএনপির নেতারা যে সব বক্তব্য রাখেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। বিএনপি নেতৃবৃন্দকে অনুরোধ জানাবো আয়নায় প্রথমে নিজেদের চেহারা দেখার জন্য।
তিনি বলেন, বিএনপি যতদিন ক্ষমতায় ছিলো আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে সব সময় ব্যারিকেড থাকতো। এখন বিএনপি অফিসের সামনে সবসময় ব্যারিকেড থাকে না। বিএনপি নেতারা নয়াপলন্টনের কার্যালয়ে বসে সকাল-বিকাল সংবাদ সম্মেলন করে মিথ্যাচার করেন। দেশে গণতন্ত্র আছে বিধায় বিএনপি প্রতিদিন তাদের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এবং প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে অগণতান্ত্রিক এবং অশোভন ভাষায় সরকার এবং সরকারের নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে বিষদগার করছে।
সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর প্রতিক্রিয়ার জবাবে সাবেক বন ও পরিবেশ মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, রিজভী আহমেদ সুবিন্যস্ত অশোভন ভাষায় বক্তব্য রাখেন এবং যেভাবে বিষদগার করেন তা রাজনৈতিক শালীনতা ও ভব্যতার সীমা অতিক্রম করে।
তিনি বলেন, বেগম জিয়া কারাগারে প্রথম শ্রেণির কয়েদির চেয়েও অনেক বেশি সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন। সার্বক্ষণিক একজন নার্স ও একজন ডাক্তারের ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে রেফ্রিজারেটর, টেলিভিশন এবং আলাদা রান্নাঘরও আছে। ব্যক্তিগত সহকারি ফাতেমাও আছেন। ২০০৭ সালের ১৬ই জুলাই আমাদের নেত্রীকে যখন গ্রেফতার করা হয় তখন তাকে যেভাবে রাখা হয়েছিল, আজকে বেগম জিয়া যে সুযোগ-সুবিধাগুলো পাচ্ছেন এই সুবিধাগুলো আমাদের নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা পাননি।
কোটা আন্দোলন প্রসঙ্গে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছিলাম আন্দোলনের সাথে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে। এতদিন বিএনপি পেছন থেকে সমর্থন দিলেও এবার বিএনপি প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়ে আমাদের বক্তব্য যে সঠিক ছিলো তা প্রমাণ করেছে। এটা কোটাবিরোধী আন্দোলন নয়, প্রকৃতপক্ষে সরকার বিরোধী, রাষ্ট্র বিরোধী আন্দোলন; তা প্রমাণ হয়েছে।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট শেখ মো. আব্দুল্লাহ, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমীন প্রমূখ।