বিনোদন প্রতিবেদক : জিয়াউল হক মনির সহকারি পরিচালক সমিতির সদস্য না হয়েও কেন এফডিসিতে শুটিং করছেন। এমন অভিযোগ এনে তার উপর হামলা করা হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ সহকারি পরিচালক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক সর্দার মামুন ও সংগঠনের আরেক নেতা কাজী মুনিরের নেতৃত্বে মনিরকে মারধর করা হয়।
ঘটনার সূত্রপাত যেখান থেকে, দীর্ঘ ১০ বছর ধরে উৎপাদন ও ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করে আসছেন মনির। সম্প্রতি তিনি সহকারি পরিচালক সমিতির সদস্য হওয়ার জন্য আবেদন করেন। অথচ একাধিকবার চিঠি দেয়ার পরও সহকারি পরিচালক সমিতির থেকে কোনও সাড়া পাননি।
এমন অবস্থায় গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে এফডিসির কড়ইতলায় শাপলা মিডিয়া প্রযোজিত ‘বয়ফ্রেন্ড’ ছবির শুটিং-এ সহকারি পরিচালক হিসেবে কাজ করছিলেন মনির। রাত ৮ টার দিকে হঠাৎ করেই সহকারি পরিচালক সমিতির আনুমানিক ১০ জন সদস্য হামলা করে। ঘটনার এক পর্যায়ে উৎপাদন ও ব্যবস্থাপক সমিতির সদস্যরা সংগঠিত হয়ে সহকারি পরিচালক সমিতির সদস্যদের উপর হামলা করে। মুহূর্তের মধ্যেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মারামারির এক পর্যায়ে পরিচালক মুশফিকুর রহমান গুলজার এবং আরও কয়েকজন নির্মাতা এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন। এই ঘটনায় মনির মারাত্মকভাবে আহত হন। দ্রুত তাকে ঢাকার একটি হাসপাতালে পাঠানো হয়।
শুটিং স্পটে এই সংঘর্ষের ঘটনা চলচ্চিত্রের কেউই ভালোভাবে দেখছেন না। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ পরিচালক সমিতির মহাসচিব বদিউল আলম খোকনের সঙ্গে কথা হয়।
আজ বুধবার বিকেলে তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি অপ্রত্যাশিত। এ ধরনের ঘটনা কখনোই কাম্য নয়। বিষয়টি নিয়ে আগে থেকেই সমস্যা ছিল। এটি নিয়ে আমাদের একটি মিটিংও হয়েছে। আমরা আজকেই হয়তো এ নিয়ে সিদ্ধান্ত দিতাম। কিন্তু আমরা কী সিদ্ধান্ত নিয়েছি তা জানার আগেই তারা এই মারামারির ঘটনা ঘটিয়েছে।’
খোকন বলেন, ‘দেখুন চলচ্চিত্রের সবাই আমরা একটি পরিবার। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি এখন কিছুটা খারাপ সময় পার করছে। যেখানে চলচ্চিত্রের সুদিন ফেরানোর জন্য আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি। তখন ভাইয়ে ভাইয়ে মারামারি মেনে নেয়া যায় না। আমি এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কখনোই সমর্থন করি না। এফডিসি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জায়গা না। ওই সময় আমি এফডিসির ডাবিং স্টুডিওতেই ছিলাম। ঘটনা শোনার পর আসতে আসতেই এমন একটা কাণ্ড ঘটালো তারা।’
চাপা ক্ষোভ নিয়ে ‘হিরো দ্য সুপারস্টার’ খ্যাত নির্মাতা বলেন, ‘অনেকেই আছেন বাইরে, যারা একটু অন্যরকম জীবনযাপন করতেন। একটা সময় চলচ্চিত্রে কাজ করতে এসে তারা শিল্পমনা, মাটির মানুষ হয়ে গেছেন। নায়ক সোহেল রানা, আমাদের খসরু ভাই (মুক্তিযোদ্ধা) তারা চলচ্চিত্রে এসে মাটির মানুষ হয়েছেন। শিল্পটাকে বুকে ধারণ করছেন। অথচ আজ আমরা একটি দেওয়ালের মধ্যে থেকে। চলচ্চিত্রের মানুষ হয়েও মারামারি করছি।’
দুই পক্ষের এই সংঘর্ষের সমাধান প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিচালক সমিতির এই নেতা বলেন, ‘মনির হাসপাতালে ভর্তি। আজ ভোরে তার জ্ঞান ফিরেছে। ও (মনির) আগে সুস্থ হয়ে উঠুক। তারও তো কিছু বলার থাকতে পারে। আমরা দুই পক্ষের কথা শুনেই ভালো কিছু যেন হয় এমন একটি সিদ্ধান্ত নেবো। আরটিভি অনলাইন