মাদক, অস্ত্র ও কোটি টাকাসহ গ্রেফতার মনির হোসেন ওরফে ‘গোল্ডেন মনিরকে’ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে ২১ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছিল পুলিশ। তবে পৃথক তিন মামলায় মোট ১৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
রোববার অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের পৃথক দুই মামলায় ১৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আবু বক্কর সিদ্দিক এবং মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক মাসুদ উর রহমান। আদালতের সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এর আগে রোববার সকালে মনিরকে থানায় হস্তান্তর করে র্যাবের পক্ষ থেকে তিনটি মামলা করা হয়।
সকালে বাড্ডা থানার ওসি পারভেজ ইসলাম জানিয়েছিলেন, মনিরকে থানায় হস্তান্তর করে র্যাবের পক্ষ থেকে তিনটি মামলা করা হয়েছে। মাদক, অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলাগুলো করা হয়েছে। মনিরকে আদালতে তুলে প্রতিটি মামলায় সাত দিন করে রিমান্ড চাওয়া হবে।
র্যাব সূত্রে জানা গেছে, ২০০১ সালে তৎকালীন প্রভাবশালী মন্ত্রী, গণপূর্ত ও রাজউকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক স্থাপন করে মনির রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ভূমি জালিয়াতি শুরু করেন। রাজধানীর বাড্ডা এলাকার রাজউকের ডিআইটি প্রজেক্টে প্রতারণার মাধ্যমে অনেক প্লট নিজের করে নেন।
অবৈধভাবে রাজউকের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের দাফতরিক সিল ব্যবহার করে রাজউক পূর্বাচলে, বাড্ডায়, নিকুঞ্জে, উত্তরায় এবং কেরানীগঞ্জে বিপুল সংখ্যক প্লট করেন। বর্তমানে নামে-বেনামে দুই শতাধিক প্লটের অধিকারী।
মনিরের ১ হাজার ৫০ কোটি টাকার ওপর সম্পদের তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়েছে র্যাব।
২০১৯ সালে তার বিরুদ্ধে রাজউকের ৭০টি নথি নিজ কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে আইনবহির্ভূতভাবে হেফাজতে রাখার দায়ে দায়ের করা একটি মামলা চলমান রয়েছে। এছাড়া অনৈতিকভাবে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করায় দুদক তার বিরুদ্ধে একটি মামলা করে। সেটাও চলমান রয়েছে।
একটি গোয়েন্দা সংস্থার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে মেরুল বাড্ডার ডিআইটি প্রজেক্টে মনিরের বাসায় শুক্রবার রাতে অভিযানে যায় র্যাব। ছয়তলা বাড়িতে শুক্রবার মধ্যরাতে শুরু হয়ে শনিবার সকাল পর্যন্ত অভিযান চলে।
অভিযানে মনিরের বাড়ি থেকে ১ কোটি ৯ লাখ টাকা, ৪ লিটার মদ, ৮ কেজি স্বর্ণ, একটি বিদেশি পিস্তল, কয়েক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। অস্ত্র ও মদের পাশাপাশি ৯ লাখ টাকা মূল্যের ১০ দেশের বৈদেশিক মুদ্রা জব্দ করেছে র্যাব।