নিউজ ডেস্ক : সোমবারের ইউএস-বাংলার দুর্ঘটনাটিসহ গত আট বছরে নেপালের ত্রিভুবন এয়ারপোর্টে নয়টি বিমান দুর্ঘটনা ঘটে। ফলে দেশটির বিমান ব্যবস্থাপনা নিয়ে আবারো প্রশ্ন উঠেছে। কিন্তু অনেক আগে থেকেই ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোতে নেপালের সব এয়ারলাইন নিষিদ্ধ রয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট এ তথ্য জানিয়েছে।
দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট জানায়, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের নিরাপত্তাবিষয়ক কর্মকর্তারা নেপালের সিভিল এভিয়েশন অথরিটি (বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ) ও নীতিনির্ধারকদের বিশ্বাস করে না।
ইইউ-এর ‘এয়ার সেফটি লিস্ট’ বা নিরাপদ আকাশ ভ্রমণ তালিকাটি আসলে একটি বিপজ্জনক সংস্থার তালিকা। এতে যেসব এয়ারলাইন অন্তর্ভুক্ত আছে, সেগুলো বেশিরভাগই স্বল্প পরিচিত। এই এয়ারলাইনগুলো আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা মানদণ্ড বা সেফটি স্ট্যান্ডার্ড মেনে চলতে সক্ষম নয়। নেপালের ১৭টি এয়ারলাইনের সবগুলো এই তালিকায় রয়েছে।
পৃথিবীর সব জায়গায় যখন আকাশ ভ্রমণ আরও নিরাপদ হচ্ছে, নেপাল তখন বারবার বিমান দুর্ঘটনার জন্য সংবাদ শিরোনামে আসছে।
২০১০ সালের আগস্ট মাসে সেখানে নেপালের অগ্নি এয়ারের উড়োজাহাজ খারাপ আবহাওয়ার কারণে অবতরণ করতে ব্যর্থ হলে দুর্ঘটনায় ১৪ জন প্রাণ হারায়। ২০১২ সালে একই রকম দুর্ঘটনায় ওই এয়ারলাইনেরই আরেকটি উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় নিহত হয় ১৫ জন।
২০১০ সালের ডিসেম্বরে নেপালেরই তারা এয়ার টুইন অটারের দুর্ঘটনায় মারা যান আরও ২২ জন। ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে বুদ্ধ এয়ারের একটি উড়োজাহাজ কাঠামাণ্ডুর কাছাকাছি বিধ্বস্ত হলে নিহত হন ১৯ জন। পরের বছর নেপালেরই সিতা এয়ারের একটি প্লেন উড্ডয়নের একটু পরেই মুখ থুবড়ে পড়লে নিহত হন ১৯ জন যাত্রী।
২০১৪ সালেও নেপালে বিমান দুর্ঘটনা চলতে থাকে। নেপাল এয়ারওয়েজের একটি টুইন অটার উড়োজাহাজ জুমলা থেকে পোখরা যাওয়ার সময় সেটির ১৮ জন যাত্রীর সবাই মারা যান। ২০১৬ সালে সেখানকার তারা এয়ারের একই রকম আরেকটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হলে ২৩ জন নিহত হয়। এর দু’দিন পর এয়ার কাষ্ঠমণ্ডপের একটি প্লেন ১১ জন যাত্রী নিয়ে বিধ্বস্ত হলে দু’জন নিহত হন।
প্রসঙ্গত, সোমবার দুপুরে ঢাকা থেকে ৬৭ জন যাত্রীসহ ৭১ জন আরোহী নিয়ে ত্রিভুবনে নামার সময় ইউএস-বাংলার ফ্লাইট বিএস-২১১ রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে এবং আগুন ধরে যায়। এতে অন্তত ৫০ জন আরোহী নিহত হন।