Current Date:Oct 13, 2024

তুমব্রু খালের পানি বৃদ্ধি পেয়ে শূন্যরেখার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পানির নিচে

উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি : গত তিন দিনের ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে নাইক্ষ্যংছড়ির সীমান্তের তুমব্রু শূন্যরেখার রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প। বুধবার সকাল ছয়টার দিকে হঠাৎ করে তুমব্রু খালের পানি বৃদ্ধি পেয়ে ক্যাম্পের বাড়িঘর কোমর পানিতে তলিয়ে গেলে রোহিঙ্গাদের মধ্যে ভীতিকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

এ সময় রোহিঙ্গারা ছেলে মেয়ে নিয়ে নিকটস্থ পাহাড়ে বা উচু এলাকায় আশ্রয় নিলেও তাদের মালামাল, খাবার জাতীয় নিত্যপন্য পানিতে ভেসে গেছে। আশ্রয়হীন এসব অভুক্ত রোহিঙ্গাদের মানবেতর দিনযাপন করতে হচ্ছে বলে স্থানীয় চেয়ারম্যান একে এম জাহাঙ্গীর আজিজ স্বীকার করে বলেন, তাদের হাতে যা খাবার আছে তা শেষ হয়ে গেলে প্রায় ৬০০ পরিবারের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অনহারে ঝড়-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে দিন যাপন করতে হবে।

বুধবার সকালে সরেজমিনে কোনার পাড়া শূন্যরেখার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে তুমব্রু গিয়ে দেখা যায়, আশ্রয় শিবির পানিতে একাকার হয়ে পড়েছে। মাছাংঘরে বেশ কিছু রোহিঙ্গা আশ্রয় নিলেও বেশিরভাগ রোহিঙ্গা ছেলে মেয়ে নিয়ে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে।

স্থানীয়রা জানালেন, অথৈ পানি পেরিয়ে এপার থেকে রোহিঙ্গাদের খাবার সরবরাহ করা কোনোভাবে সম্ভব না। গ্রামবাসীরা জানান, ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে মাছাংঘরে যেসব রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে তাদের অবস্থা আরো অবনতি হবে।

মুঠোফোনে শূন্য রেখা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নেতা দিল মোহাম্মদ জানান, গত তিন দিন ধরে বৃষ্টি হলেও পানি উঠেনি। বুধবার সকাল ছয়টার দিকে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানিতে গোটা আশ্রয় শিবির কোমর পানিতে তলিয়ে যায়। এমন অবস্থার জন্য অপ্রস্তুত রোহিঙ্গারা দিকবিদিক ছুটাছুটি করে উচু এলাকায় আশ্রয় নিলেও তাদের খাবার বলতে কিছুই নেই। সে আরো জানান, তাদেরকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে না নেয়া পযন্ত গোটা বর্ষায় পানির সাথে পাল্লা দিয়ে ঝুঁকিতে দিন যাপন করতে হবে।

এপার ওপার যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারনে রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির পক্ষ থেকে তাদেরকে সহযোগিতা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির কর্মীরা জানিয়েছেন। রোহিঙ্গা মাঝি শাহ আলম জানান, আশ্রয়হীন রোহিঙ্গাদের খাবার রান্না করার জন্য রোহিঙ্গা কর্মীরা আয়োজন শুরু করলেও কখন তারা দুমুটো খেতে পারে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। তাছাড়া তুমব্রুর সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় রোহিঙ্গাদের অসহায় অবস্থায় সময় কাটাতে হচ্ছে কখন পানি কমে যায়। তবে স্থানীয়রা জানালেন, ভয়ের কিছু নাই, বৃষ্টি কমলেই পানি দ্রুত নেমে যাবে। এতে পরিস্থিতি আবারো স্বাভাবিক হয়ে উঠবে।

কক্সবাজার ৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খান তুমব্রু শূন্যরেখা আশ্রয় শিবিরের একাংশ তলিয়ে যাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আশ্রয়হীন রোহিঙ্গাদের খাবার ও সার্বিক সেবাসমূহ প্রদান করার জন্য রেডক্রিসেন্ট সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

Share