মুরগির দাম কিছুটা কমলেও বেড়েছে অধিকাংশ নিত্যপণ্যের দাম বিপাকে নিন্ম আয়ের মানুষ

0
112

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীতে মুরগীর দাম কিছুটা কমলেও অধিকাংশ নিত্যপণ্যের দাম বাড়তি থাকায় মধ্যবিত্ত বা নিন্ম আয়ের মানুষ বিপাকে পড়েছে। এদিকে রাজধানীর বাজারে ভোজ্যতেলের দামের পাশাপাশি চালের দামও বাড়তি। শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়। প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা কমেছে। পাকিস্তনি কক বা সোনালি মুরগি দাম কমেছে কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত। মুরগির দাম কমলেও সপ্তাহের ব্যবধানে সবজি, ডিম, মাছ, পেঁয়াজ, আলুর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রতিকেজি নাজিরশাইল, মিনিকেট ও বাশমতি নামের সরু চাল বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৬৫-৭০ টাকায়।
এছাড়া মোটা মানের স্বর্ণা ও চায়না ইরি বিক্রি হচ্ছে ৪৮-৫০ এবং মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা চাল ৫৫-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি আটা (প্যাকেট) ৪২-৪৫ এবং খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে ৩৬-৪০ টাকায়। এছাড়া প্রতিকেজি মশুর ডাল মানভেদে ৯৫-১২৫, পেঁয়াজ দেশী ৩০-৪০, , আদা ৮০-১২০,
বাড়তি দামের বোতলের তেল ইতোমধ্যে বাজারে চলে এসেছে। বোতলের সয়াবিন তেলের পাশাপাশি বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে খোলা সয়াবিন তেল ও পাম অয়েল। গত কয়েক দশকের মধ্যে এই দাম সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলেও দেশে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ায় সাধারণ ভোক্তাদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। দ্রুত ভোজ্যতেলের দাম কমানোর পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলছেন ক্রেতারা। গতকাল সাপ্তাহিক ছুটির দিন রায়সাবে বাজার থেকে ভোজ্যতেল কিনছিলেন পাঁচভাই ঘাটলেন বাসিন্দা খালেদা আক্তার বলেন, দফায় দফায় বাড়ছে ভোজ্যতেলের দাম। অথচ বাইরের দেশে কমছে। সরকারী সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করেই তেলের দাম বাড়ানো হচ্ছে। ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে বাজার মনিটরিং জোরদার হওয়া প্রয়োজন। পাাঁচ ভাই ঘাটলেন মুদি পণ্যের ব্যবসায়ী নাজমুল বলেন, পাইকারি বাজার ভোজ্যতেলের দাম বাড়ছেই। আর এ কারণে খুচরায়ও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দুদিন ধরে তেলের দাম বাড়তি। বোতলের সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৫ থেকে ৮ টাকা বেড়েছে। খোলা সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে ১০ টাকা পর্যন্ত। পাম অয়েলের দামও কেজিতে ১০ টাকার মতো বেড়েছে।

ব্যবসায়ীদের তথ্য অনুযায়ী, নতুন আসা বোতলের এক লিটার তেলের গায়ের (লেভেলে লেখা) মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬৫ থেকে ১৬৮ টাকা, যা আগে ছিল ১৬০ টাকা। আর পাঁচ লিটার বোতলের সয়াবিন তেলের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৮৫ থেকে ৮০০ টাকা, যা আগে ছিল ৭৬০ টাকা।

অন্যদিকে খোলা সয়াবিন তেলের কেজি এখন খুচরা ব্যবসায়ীরা বিক্রি করছেন ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা, যা আগে ছিল ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা। পাম অয়েলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা, তা আগে ছিল ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা।

ব্যবসায়ীরা ভোজ্যতেলের দাম বাড়িয়ে দিলেও গত ১৯ জানুয়ারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানান, আগামী ১৫ দিনে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ছে না। ৬ ফেব্রুয়ারির পর সিদ্ধান্ত হবে তেলের দাম বাড়বে না কমবে।
ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা। পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৬০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা।

মুরগির দামের বিষয়ে রায়সাহেব বাজারের ব্যবসায়ী জাকির বলেন, কয়েক সপ্তাহ ধরে মুরগির দাম কমতির দিকে। একমাসের মধ্যে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ৪০ টাকা কমেছে। আমাদের ধারণা সামনে মুরগির দাম আরও কমবে।

এদিকে, ভালো মানের দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা। আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা। ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১১৫ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে এসব পণ্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। গাজরের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। শিম মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৬০ টাকা। শীতের অন্যতম সবজি ফুলকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা। শাল গমের (ওল কপি) কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা।

এছাড়া বরবটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা। লাউয়ের পিস বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। লালশাকের আঁটি ১০ থেকে ১৫ টাকা, পালংশাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে সবজি ও শাকের দামে খুব একটা হেরফের হয়নি।

মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে কাতল মাছ। শিং ও টাকি মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা। শোল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা। তেলাপিয়া ও পাঙাস মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা।

এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা। ছোট ইলিশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। নলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি।