৪০ রাউন্ড গুলি চেয়ে সেই ডিআইজি মিজানের আবেদন

0
112

মাগুরা প্রতিনিধি : নারী কেলেংকারিসহ নানা কারণে আলোচিত হয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টারে সংযুক্ত ডিআইজি মিজানুর রহমান পিপিএম আজ সোমবার তার ব্যক্তিগত পিস্তলের জন্য মাগুরা জেলা প্রশাসনের কাছে ৪০ রাউন্ড গুলি কেনার অনুমতি চেয়েছেন। যা নিয়ে প্রশাসনের নানা স্তরে চলছে আলোচনা ও কৌতুহল।

মাগুরায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসাবে কর্মরত থাকা অবস্থায় ১৯৯৮ সালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ব্যক্তিগত পিস্তলের এই লাইসেন্সটি নিয়েছিলেন মিজানুর রহমান।

মাগুরা জেলা প্রশাসক বরাবর ডিআইজি মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত এক পত্রে উল্লেখ করেছেন, ১৯৯৮ সালে মাগুরায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় পিস্তলের একটি লাইসেন্স নেন। যার নম্বর-০৬/মাগুরা/১৯৯৮।

এই লাইসেন্সের বুনিয়াদে ২০১১ সালে তিনি একটি ৩২ বোর পিস্তল ক্রয় করেন। যার নম্বর-ডিএএ-৪৯৪৩৮১ মেইড ইন ইউএসএ। একই সঙ্গে ক্রয় করেন ১০ রাউন্ড গুলি। বর্তমানে তিনি ৩২ বোরের আরো ৪০ রাউন্ড গুলি কিনতে ইচ্ছুক। ঢাকা থেকে একজন পুলিশ কনস্টেবলের মাধ্যমে তিনি মাগুরা ডিসি অফিসে ওই আবেদনপত্র পাঠিয়েছেন। ২০ বছর আগে গৃহিত লাইসেন্সের ১৩ বছর পর কেনা পিস্তলের জন্য মিজানুর রহমান কেন এখন হঠাৎ এই ৪০ রাউন্ড গুলি কিনতে চাইছেন সেটিই এখন প্রশাসনে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, ২০১৭ সাল পর্যন্ত মাগুরা ডিসি অফিস থেকে মিজান তার লাইসেন্স নিয়মিত নবায়ন করে আসছেন। ২০১৮ সালে তিনি অন্য জেলা থেকে পিস্তলের লাইসেন্স নবায়ন করেছেন। কিন্তু দাপ্তরিকভাবে তাদের কাছে সেই তথ্য এখনো আসেনি। এ ছাড়া অতীতে এ ধরনের লাইসেন্সধারীদের গুলির হিসাব দেয়ার নিয়ম না থাকলেও বর্তমানে সরকার আগ্নেয়াস্ত্র গুলির খরচের হিসাব দেওয়ার নিয়ম করেছে। এ কারণে মিজানুর রহমান অতীতে যে ১০ রাউন্ড গুলি কিনেছিলেন তার হিসাব থাকা জরুরি। যা আবেদনে উল্লেখ নেই।

মাগুরা জেলা প্রশাসক আতিকুর রহমানের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আবেদনের বিষয়টি স্বীকার করেন। তবে এ ব্যাপারে তিনি কোনো মন্তব্য করছে রাজি হননি।

অন্যদিকে মাগুরা জেলা প্রশাসকের কাছে দেয়া আবেদনে ডিআইজি মিজানুর রহমান যে মোবাইল ফোন নম্বরটি দিয়েছেন সেটি বন্ধ থাকায় এ বিষয়ে তার কোনো মন্তব্য মেলেনি।

প্রসঙ্গত, ৩০.০১. ৯৭ সাল থেকে ২২.১২.৯৮ পর্যন্ত ডিআইডি মিজানুর রহমান মাগুরায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পরবর্তীতে পুলিশ সুপার ও ডিআইজি হিসাবে পদোন্নতি পান তিনি। এ বছর জানুয়ারী মাসে মরিয়ম আক্তার ইকো নামে এক তরুণী সংবাদমাধ্যমের কাছে মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে অপহরণসহ জোরপূর্বক বিয়ে ও আটকে রাখার অভিযোগ আনেন।

এ ঘটনার আগে ডিআইজি মিজানুর রহমান ফিল্মি স্টাইলে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের জনৈক সংবাদ পাঠিকাকে পিস্তলের মুখে জোর করে গাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সময় জনতার হতে ধরা পড়েন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাকে জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে। রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ধরনের একাধিক অভিযোগে মিজানুর রহমানকে ঢাকা পুলিশ হেড কোয়ার্টারে ক্লোজড করা হয়।