ঈদ শেষে জলজট-যানজটে রাজধানীবাসীর ভোগান্তি

0
212

ঈদ-উল-ফিতরের ছুটির পর আজ শনিবার সকাল থেকে মানুষের কর্মব্যস্ততায় রাজধানীতে চাঞ্চল্যতা ফিরতে শুরু করে। তখনই বাধা হয়ে দাঁড়ায় বৃষ্টি। সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর ভোগান্তি শুরু হয়। বেলা ১০টার পর থেকে বৃষ্টি বাড়তে থাকায় জলজট আর যানজটে ভোগান্তিতে পড়েন অফিসগামী চাকরিজীবী ও স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা।শনিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত সরেজমিনে, রাজধানীর মিরপুর ১০ থেকে কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগাঁরগাও থেকে বিজয় সরণি, গ্রীন রোড, সংসদ ভবনের পূর্ব পাশের এলাকায় জলজট দেখা যায়। জলজটের কারণে রাস্তায় স্থবির হয়ে পড়ে যান চলাচল।

ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ জানায়, ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের যথাসম্ভব চেষ্টা সত্ত্বেও যানজট নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির কারণে হাঁটু পানি জমে থাকায় যানজট আরও বাড়িয়েছে। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র থেকে বিজয় সরণি ঢোকার মুখের উভয় পাশের সড়কে তীব্র যানজট লক্ষ্য করা যায়। ফার্মগেট থেকে বিজয় সরণি ও মহাখালী থেকে ফার্মগেট যাওয়ার সড়কেও যান চলাচলে স্থবির অবস্থায় লক্ষ্য করা যায়। কারওয়ান বাজারের ওয়াসা ভবনের সামনে সড়কেও পানি জমে থাকতে দেখা গেছে। অনেক পথচারীকে হাঁটুর ওপরে প্যান্ট গুটিয়ে জুতা হাতে হাঁটা শুরু করতে দেখা যায়।

বৃষ্টি কমার পরপরই রাজধানীর গুলিস্তান, বঙ্গভবন, ধানমন্ডি ২৭ নম্বর রাপা প্লাজা সংলগ্ন সড়ক, গ্রিন রোড, বাড্ডা, মিরপুরের কাজীপাড়া মেট্রোরেল প্রকল্পের পাশের সড়ক, মিরপুর ১০ নম্বর, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বিভিন্ন সড়কে পানি জমে যায়। সেসব সড়কে গণপরিবহন ও রিকশা না থাকায় হাঁটু পর্যন্ত পানি পেরিয়ে পায়ে হেঁটে অনেককে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে।জলাবদ্ধতার কারণে রাজধানীর মিরপুর রোড, শ্যামলী, মিরপুর ১০ নম্বর, ধানমন্ডি-২৭ নম্বর এলাকায় যানজট দেখা গেছে। এসব সড়কের সিগন্যাল পার হতে ২০ থেকে ৩০ মিনিট সময় লাগছে।ফার্মগেটে ট্রাফিক পুলিশের এক সদস্য বলেন, ঈদের পর আজ শনিবার অধিকাংশ বেসরকারি অফিসে ফিরেছেন কর্মব্যস্ত মানুষ। সকাল থেকেই যানবাহনের চাপ শুরু হয়। বৃষ্টির কারণে প্রধান সড়ক ও এর আশপাশ এলাকার সড়কগুলোর পানি নিষ্কাশন প্রক্রিয়া বন্ধ। তাই জলাবদ্ধতাই যানজটের বড় কারণ।

ডিএমপির ট্রাফিক পশ্চিম বিভাগরে তেজগাঁও এলাকার এডিসি মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, পানি নিষ্কারণের দায়িত্ব কিন্তু পুলিশের নয়। যেখানে স্বাভাবিক দিনেই রাজধানীর যানজট নিরসনে পুলিশকে হিমশিম খেতে হয় সেখানে জলাবদ্ধতা যানজট তৈরি করছে। তবে আমরা আমাদের দায়িত্বটা ঠিকমতো পালনের সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। যেখানে পানি জমেছে, তার সাইট দিয়ে যান চলাচল স্মুথ (সহজ) করার চেষ্টা চলছে। কোথাও যেন গাড়ি না দাঁড়ায়, ধীরে হলেও যেন যানবাহন চলতে পারে সে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।কারওয়ান বাজার ওয়াসা ভবনের সামনের সড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা শাকিল আহমেদ বলেন, ওয়াসার কাজ পানি নিষ্কাশনে পদক্ষেপ নেয়া। সেখানে উল্টো চিত্র। খোদ ওয়াসা ভবনের সামনের সড়কে হাঁটু পানি। আমরা ঠিকমতো হাঁটাচলা করতে পারি না।

ট্রাফিক উত্তর বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল, সাত রাস্তা ও লাভ রোডে জলজটের কারণে অফিসগামী মানুষদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়।তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকার সহকারী কমিশনার রুমানা নাসরিন বলেন, রাস্তা ভাঙার কারণে বৃষ্টিতে সকালে হাঁটু পানি জমেছিল। গাড়ির চাপ কম থাকলেও জলাবদ্ধতার কারণে রাস্তায় যান চলাচলে গতি হারায়। এর মধ্যে রাস্তায় বেশ কয়েকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা বিকল হয়ে পড়ায় রাস্তায় যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। পরে সেসব বিকল যানবাহন সরিয়ে নেয়া হয়েছে। দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ পানি নিষ্কাশনে যান চলাচলে গতি ফিরেছে।