বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার বাড়লেও কমেছে জিপিএ-৫

0
82

নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষায় পাসের হার ৭০.৫৫ ভাগ। এবার বরিশাল বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৭০ জন। গত বছর বরিশাল বোর্ডে এইচএসসি’তে পাসের হার ছিলো ৭০.২৪ ভাগ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছিলো ৮১৫ জন।

বরিশাল বোর্ডের আওতাধীন বিভাগের ৬ জেলার ৩৩৩টি কলেজ থেকে এবার ৬২ হাজার ১শ’ ৭৩ জন পরীক্ষার্থী ১১৬টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাশ করেছে ৪৩ হাজার ৮শ’ ৬৩ জন। পাশের হার ৭০.৫৫ ভাগ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৭০ জন।

পরিসংখ্যানগত ফলাফলে এবার বিভাগের মধ্যে বরিশাল জেলায় পাশের হার ৭৬.৩০ ভাগ, ঝালকাঠীতে ৭৩.৮৭ ভাগ, ভোলায় ৭০.১২ ভাগ, পিরোজপুরে ৬৮.৯২ ভাগ, বরগুনায় ৬৬.৭৫ ভাগ এবং পটুয়াখালী জেলায় পাশের হার ৬১.২২ ভাগ।

এবার বরিশাল বিভাগের ৫টি কলেজের শতভাগ পরীক্ষার্থীরা পাশ করেছে। এর বিপরীতে বিভাগের মধ্যে ২টি কলেজের শতভাগ শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে। এরমধ্যে পটুয়াখালী জেলার পশুরবুনিয়া ইসলামিয়া মহিলা কলেজ থেকে ১৭ জন এবং বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার সাতলা আইডিয়াল কলেজ থেকে ১ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সবাই ফেল করেছে।

আজ দুপুর দেড়টার দিকে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর আনোয়ারুল আজিম আনুষ্ঠানিকভাবে পরিসংখ্যানগত ফল ঘোষণা করেন। এর পরপরই স্ব-স্ব কলেজে ফলের জন্য ভীড় করে উৎসুক শিক্ষার্থীরা।

ফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত বছরের চেয়ে এবার বরিশাল বোর্ডে পাশের হার ০.৩১ ভাগ বাড়লেও জিপিএ-৫ কমেছে। পাশের হার কিছুটা কমলেও এবার প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষার্থীদের কান্নার রোল দেখা গেছে। কেউ কেউ পাশ করলেও প্রত্যাশিত ফল না পাওয়ায় অসন্তোষ চেপে রাখতে পারেননি। আবার কেউ কেউ জিপিএ-৫ পেলেও সহপাঠীরা প্রত্যাশিত ফল না করতে পাড়ায় আক্ষেপ করেছেন তারা। ভালো ফল পাওয়া শিক্ষার্থীরা তাদের অর্জনের কৃতিত্ব দিয়েছেন শিক্ষক এবং অভিভাবকদের।

প্রত্যাশিত ফল না পাওয়ার কারণ হিসেবে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্রে ১২টি ভুল এবং কঠিন প্রশ্নপত্রকে দুষছেন শিক্ষার্থীরা। এ জন্য শিক্ষা বোর্ডকে দায়ি করেছেন তারা।

সন্তানদের প্রত্যাশিত ফল না হওয়ায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকরাও। অভিভাবক আরজু বেগম জানান, অনাকাংখিত প্রশ্নপত্র এবং প্রশ্নে ভুলের কারণে ফলাফলে ধ্বস নেমেছে। এর দায় শিক্ষার্থী কিংবা শিক্ষকদের নয়। যারা প্রশ্নপত্র করেছেন তারাই এ জন্য দায়ী। এই ফলে অসন্তস্ট তিনিসহ অন্যান্য অভিভাবকরা।

আঞ্জুমানআরা বেগম নামে এক অভিভাবক বলেন, সন্তানদের নিয়ে তারা যতটা পরিশ্রম করেছেন, তাদের জন্য যত শ্রম দিয়েছেন, যত টাকা খরচ করেছেন, শিক্ষাথীরা যত পরিশ্রম করেছেন সেই তুলনায় কোন ফল পাননি তারা। এ জন্য তিনিও বোর্ড কর্তৃপক্ষের উপর দায় চাপিয়েছেন।

এ বিষয়ে কোন বক্তব্য দিতে রাজী হয়নি বরিশাল শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ।

যদিও শিক্ষার্থীদের খারাপ ফলের দায় কলেজ কিংবা শিক্ষা বোর্ডের উপর বর্তায় না বলে দাবী করে বরিশাল সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুল মোতালেব হাওলাদার বলেন, তারা প্রতি বছরই আশা করেন, যেন শতভাগ শিক্ষার্থী পাশ করে। কিন্তু সেটা সম্ভব হয় না। নিজের কলেজের ফল ভালো হলেও বরিশাল বোর্ডের সার্বিক ফলাফলে সন্তুষ্ট নয় বলে জানান বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের সাবেক সচিব ও মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুল মোতালেব হাওলাদার। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য শিক্ষার্থীদের শতভাগ ক্লাশে উপস্থিতি, পড়াশোনায় আরও মনযোগী হওয়া এবং টেক্স বই পড়ার উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।